পরিকল্পিত বিয়ে

"ওকে ধর্ষন তো দূরের কথা ছুঁয়েও দেখিনি আমি!"  

রাগে আক্রোশে চিৎকার করে বললাম আমি।
কিন্তু কেউ বিশ্বাস করছে না আমার কথা। মেয়েটা লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচু করে মুচকি মুচকি হাসছে। কাজী সাহেব বিয়ে পড়াচ্ছেন। 

আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। পালনোর পথ নেই। এ কোথায় এসে ফেঁসে গেলাম! নিজের উপর ভীষণ রাগ হচ্ছে। পাশের রুম থেকে আম্মার কান্নার আওয়াজ পাচ্ছি। আম্মা কল্পনাও করতে পারছে না, আমি এমন ঘৃণিত একটা কাজ করতে পারি! যে ছেলে বাসায় মেয়ে আত্মীয় আসলে হাটু কাঁপে। বাসা থেকে পালিয়ে যায়। কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে পর্যন্ত তাকায় না। সবসময় নজর হেফাজত করে চলে। সে ছেলে অন্যের বাসায় ঢুকে যেনা করে কি করে! আম্মার কান্নার আওয়াজ শুনে আমারও খুব কান্না পাচ্ছে। 

মেয়ের বাবার গুন্ডা প্রকৃতির লোকজনেরা আমার হাত চেপে ধরে বসে আছে। কাজি সাহেব বার বার বলেই যাচ্ছে - 
- "বলো বাবা কবুল।"

কবুলের নিকুচি করি। দাঁতে দাঁত চেপে মনে মনে বলে উঠলাম আমি। আমার এমন মেয়েকে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই নেই। একে তো বেপর্দা নির্লজ্জ, উপরন্তু উদ্ভট টাইপের। কেমন যেন ছেলে ছেলে ভাব! এমন দ্বীনহীন মেয়েকে বিয়ে করার থেকে তো কলাগাছকে বিয়ে করা ভালো। তাছাড়া প্রিয় নবী (সঃ) দ্বীনদারী দেখে বিয়ে করতে বলেছেন। কতো আশা করেছিলাম দ্বীনদার পর্দাশীল একজন মেয়েকে বউ হিসেবে পাবো! যার হৃদয়ের প্রতিটি অনু-পরমাণু জুড়ে থাকবে আল্লাহ পাকের প্রেমে ভরপুর! যার প্রতিটি কথায় ইসলামের সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। যার কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে হৃদয় শীতল হবে! যে প্রতিদিন আল্লাহর মহত্ত্ব বড়ত্বের কথা শুনাবে আমায়। এমন একটা মেয়েকে বিয়ে করার কতো আশা ছিলো। হায়! আমি কি আর এমন মেয়ে পাবো? পুরো সমাজের চোখে আজ আমি একজন যেনাকারী, একজন ধর্ষনকারী! ভাবতে ভাবতে চোখে পানি চলে এলো আমার...!

হঠাৎ পাশে বসা লোকটা আমার ডান হাতের উপর অনেক বড় একটা চিমটি কেটে পান খাওয়া তামাটে দাঁতগুলো বের করে বিদঘুটে হাসি দিলো। আমি আৎকে উঠলাম। বাপরে.. এই লোক গত দু'সপ্তাহে নখ কেটেছে বলে আমার মনে হয় না। এতো জোরে কেউ চিমটি দেয়! মনে হচ্ছে এক খাবলা মাংস তুলে নিয়েছে। উফফ.. ব্যাথায় জ্বলছে একদম। লোকটা কি চিমটি দিয়ে কবুল বলাতে চাচ্ছে নাকি?

আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। হিংস্র অমানবিক চিমটিটা খাওয়ার পর মেজাজ এতোটাই প্রখর হয়ে গেল যে, সাহস করে বলেই ফেললাম -
- কবুল আমি বলবো না। বিয়েও করবো না। আর এভাবে জোরজবরদস্তি করে কখনো বিয়ে হয়?
- কিহ!... কবুল বলবি না? ইন্দুরের বাচ্চার সাহস কতোবড়ো দেখেছিস! পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে বিয়ে পড়াচ্ছি তাও পোষাচ্ছে না! এই ওরে আমার স্পেশাল রুমে নিয়ে আয় তো। কবুল বলবে না শালা! দেখাচ্ছি মজা। গুনে গুনে এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার বার কবুল বলবি ইন্দুরের বাচ্চা। 

বজ্জাত মেয়ের বজ্জাত বাবার গলায় এসব ভয়ানক উৎকট কথা শুনে কলিজা শুকিয়ে এলো আমার। মেয়ের বাবা এলাকার অনেক বড় মাপের একজন নেতা। আগে ছিলেন দাগী আসামি চুন্নু মিয়া। পরপর তিন তিনটা খুন করেছেন তিনি। জেলে ছিলেন দুই বছর। জেল থেকে এসে নেতা গান্ধীজি বনে গেলেন। মাথা কামিয়ে জনগণের সেবা শুরু করে দিলেন। কার বাসায় খাবার নাই! কার বাসায় অসুস্থ! কার বাসায় অভাব! কার বাসায় কলহ-বিবাদ! এম্বুলেন্সের গতিতে ছুটে যেতেন তিনি। আর সবকিছুর সমাধান করে দিতেন। ধীরে ধীরে এতটাই প্রভাব প্রতিপত্তি হয়ে গেলো তার, মন্ত্রী সাহেবের ছেলের সাথে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলেন সে বছর। 

এদের সাথে পেরে ওঠা মুসকিল। সত্যি সত্যি রুমে ঢুকিয়ে মারতে মারতে পিঠের ছাল যে তুলে দিতে পারে সে বিষয়ে তিল পরিমাণও সন্দেহ নেই আমার। এরকম অনেক ঘটনার কথাও শুনেছি। সে সেসব ঘটনা মনে করে গায়ের লোম কাঁটা দিয়ে উঠলো আমার। তাছাড়া থানা পুলিশও এদের হাতে মুড়িমুড়কির মতো! মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকলাম। আল্লাহ যেন ওই বদমাশটার উপর সপর্দো করে না দেন। কিন্তু আমার একটা সমস্যা হলো আমি অনেক ছোট থেকেই ভীষণ ভীতু টাইপের। ভয় পেলে টুঁ শব্দটাও মুখ দিয়ে বের হয় না। কি করবো না করবো ভেবে না পেয়ে ইতস্তত করতে লাগলাম। 

মেয়ের বাবা হঠাৎ জোরে হুংকার ছাড়লেন। কয়েকজন উদ্ভট টাইপের ছেলে ছুটে এলো আমার দিকে। তাদের চেহারা বাংলা সিনেমার ভিলেনদের মতো। কারো গালে কাটা দাগ তো কারো হাতে কাটা দাগ! দেখে মনে হলো মারামারিতে ভীষণ এক্সপার্ট। তাদের  মধ্যে অনেকেরই দু'হাতে ব্রেসলেট, কানে দুল, মাথায় মুরোগ স্টাইলের চুল! আবার চুলের ভেতরেও মাস্তান মাস্তান টাইপ একটা ব্যাপার আছে। চোখের ভেতরে তাদের দাউদাউ আগুন! এই যেন জ্যান্ত চিবিয়ে খাবে আমায়! ভয়ে আমি তিন বারের জায়গায় চার বার কবুল বলে ফেললাম। পাশের মোটা লোকটা উত্তেজনায় আরেকটা চিমটি দিয়ে ফেললো!

আমি অসহায় দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকালাম। লোকটা আবারো আমার দিকে তাকিয়ে সেই একই ভঙ্গিতে খয়েরী দাঁতগুলো বের করে বিদঘুটে হাসি দিলো। আমি কাতর গলায় বললাম-
- এটা কি হলো ভাই? এভাবে বারবার চিমটি দিচ্ছেন কেন? তখন দিয়েছেন কবুল বলিনি এজন্য। এখন আবার দিলেন কেন? বললাম তো কবুল! 

- আরে ভাইজান রাগ করতাছেন কিল্লাই। এই যে চিমডিটা দিলাম, এইডা হইলো মোহাব্বতের চিমটি। বাসর রাইতে যাইতাছেন। কতো যে মোহাব্বতের ব্যাপার! যাদুরে যাদু... আমার বাসর রাইতের কতা মনে পরতাছে বাইজান। আহা! কি সময়টাই না গেছিলো ওই দিন। যাই হোক। দুয়া কইরেন বাইজান। আমাগো ছাড়াছাড়ি অওনের তিন মাস হইলো। আবার যেন ভালো একটা নিকা করতে পারি। 

কথাগুলো বলেই লোকটা আমায় এক ঝটকায় কোলে তুলে নিলো। এরপর কোনো কিছু বোঝার আগেই হনহন করে ছুটে একটা রুমের ভেতর নিয়ে গিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলো। আমি আহ্ শব্দ করে চেঁচিয়ে উঠলাম। কোমড়টা বুঝি ভেঙে গেল! 

• 
রাত ১২:২০ বাজে তখন। রুমের বাইরে তালা মেরে চলে গেল সবাই। অনেক মিনতি করেও আম্মার সাথে কথা বলতে দিলো না ওরা। আম্মার সাথে কিছু কথা বলতাম। আমি জানি তিনি আমার মনের কষ্টটা বুঝবেন। পৃথিবীতে মা ছাড়া সন্তানের কষ্ট অন্য মানুষ বুঝতে চায় না। আমি একটা মেয়ের সাথে যেনা করেছি, এটা ভেবে ভেবে বেচারি হয়তো পুরোপুরি ভেঙে পরেছেন। অথচ প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই আম্মা আমার রুমের সামনে এসে ডেকে বলেন, "বাবা জাহিদ গরম দুধটা খেয়ে নিস।" সেই আম্মা কি আর আগের মতো আমায় জাহিদ বলে ডাকতে পারবে? নাকি ভীষণ ঘৃণা করবে! নাকি বাড়ি থেকে বের করে দেবে!

ভাবতে ভাবতে এসি রুমেও পুরো শরীর ঘামতে লাগলো আমার। বিছানায় ধপাস করে বসে পরলাম।
- আমার নাম বৃষ্টি। আজ থেকে আপনার বউ। 
চমকে উঠলাম আমি। লজ্জাহীন মেয়েটা বলে কি! বিছানায় বসাটাই ঠিক হয়নি। সরে এলাম আমি৷ মেয়েটাও আমার দিকে সরে এলো। এরপর মেঝেতে বসে পরলাম। মেয়েটাও মেঝেতে নেমে এলো।

আমি নাক সিঁটকানো সুরে বললাম-
- প্লিজ একদম কাছে আসবেন না আমার। দূরে থাকুন। 
- ছি! বউকে এভাবে বলতে হয়?

- কিসের বউ! আপনাকে আমি বউ বলে মানি না। আপনি আমার জীবনটা তছনছ করে দিলেন। আমার স্বপ্নকে গুড়িয়ে দিলেন। কতো আশা ছিলো একজন নেককার পরহেজগার মেয়েকে বিয়ে করার জানেন!...
কথাগুলো শেষ না হতেই গলাটা ধরে এলো আমার। আমি আর কথা বলতে পারলাম না। 

- জানি অনেক কষ্ট পেয়েছেন। সমস্যা কি! আমি আপনার মনের মতে হয়ে নিবো!
- চুপ করুন আপনি! দূর হয়ে যান দয়া করে। আপনাকে দেখার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। মিথ্যে ধর্ষনের নাটক করে আমার মাকে কষ্ট দিয়েছেন আপনি। দূর হোন। 
- প্লিজ রাগ হবেন না। বিষয়টা বুঝতে পারছি আমি। আন্টিকে সবকিছু বুঝিয়ে বলবো এখন, সবকিছু শুনলে উনি আর কষ্ট পাবেন না। আপনি হয়তো জানেন না আমি আপনাকে কতোটা ভালোবাসি।  আপনাকে পাওয়ার জন্যই তো এতোকিছু করলাম। এখন আর হারাতে পারবো না আপনাকে। কিছুতেই না।

- ভালোবাসা! এটাকে ভালোবাসা বলে? 
- কেন বলে না? প্রতিদিন কলেজ যাওয়ার পথে আপনাকে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতাম। আপনি কোনো মেয়ের দিকে তাকান না। মাথা নিচু করে হাঁটেন। দেখতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। সবসময় আপনাকে নিয়ে ভাবতাম। আপনাকে কাছে পাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠতো। আপনি তো আর প্রেম ট্রেম করবেন না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিয়ে করবো। কিন্তু যখন শুনলাম আপনি আমাকে বিয়ে করবেন না তখন এই ধর্ষনের নাটকটা সাজিয়েছি। এছাড়া আমার আর কোনো পথ খোলা ছিলো না। আমি আপনাকে পাওয়ার জন্য এসব করেছি। নিজের ইজ্জতের দিকেও আর তাকাইনি। কারণ ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে। আপনাকে ছাড়া আমি একদণ্ডও থাকতে পারবো না। মরে যাবো। 

তার কথাগলো শুনে পুরোপুরি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম আমি। হঠাৎ একটা বিষয় অনুধাবন করে চোখ ফেটে জল গড়াতে লাগলে আমার। হায়! এই মেয়ে আমাকে পাওয়ার জন্য এতোকিছু করেছে, নিজের আত্মসম্মানকে বিলিন করেছে, সমাজের কাছে ছোট হয়েছে, পরিবারের কাছ ছোট হয়েছে, শুধু আমাকে পাওয়ার জন্য! আর আমি কি করেছি আল্লাহর জন্য? অথচ আল্লাহকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি। তার জন্য কই পারলাম তাহায্যুদে উঠে কান্নাকাটি করে মুনাযাত করতে? কই পারলাম খুশু-খুজু ওয়ালা নামাজ পড়তে? কই করতে পারলাম নির্জনে বসে জিকির? কই থাকতে পারলাম তার ভাবনায় নিমগ্ন? কই গুনাহ থেকে বাঁচতে পারলাম আমি! আর কোথায়-বা তাকে পাওয়ার জন্য আমার হৃদয়ের আকুলতা!
এসব ভাবতেই হুহু করে উঠলো ভেতরটা। 

বৃষ্টি অবাক দৃষ্টিতে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। 
- এই যে আপনি হঠাৎ এভাবে কাঁদছেন কেন? 

আমি জুব্বার হাতায় চোখ মুছলাম। আবার কান্না আসে, আবার চোখ মুছি।
- কি হলো বলছেন না যে! এভাবে কাঁদছেন কেন? 
- আমি তো এজন্য কাঁদছি যে, আপনি আমায় ভালোবাসেন বলে এতো কিছু করেছেন অথচ আল্লাহ পাককে আমি ভীষণ ভালোবাসি কিন্তু তার জন্য আজ পর্যন্ত কিছুই করতে পারি নি। একটাবার ভেবে দেখুন, আমি আপনাকে কিছুই দেইনি তবুও আপনি আমাকে ভালোবাসেন, এবং এতো কিছু করলেন, ইজ্জতসম্মানকে জলাঞ্জলী দিলেন শুধুমাত্র আমাকে পাওয়ার জন্য!
আর যে আল্লাহ পাক আমাকে প্রতিটা দিনরাত এতো 
এতো গুনাহের পরেও আগলে রেখেছেন ! কখনো ছেড়ে যান নি। কখনো খাবার কেড়ে নেননি, কখনো পানি কেড়ে নেন নি, কখনো অক্সিজেন কেড়ে নেননি। কোটি কোটি ভাইরাস, কোটি কোটি জীবণু থেকে প্রতিনিয়ত বাঁচিয়ে রাখছেন। কোটি কোটি নেয়ামতে ভরিয়ে রাখলেন। সে আল্লাহর জন্য কতোটা তাহলে ব্যাস্ততা তাহলে থাকা উচিত? তার জন্য কতোটা ভালোবাসা থাকা উচিত? অথচ আমি কিছুই করতে পারলাম না! কোথায় আমার নেক আমল! হায়! আমি কি নিয়েই বা দাঁড়াবো তাঁর সামনে! 

আমি আর কিছুতেই কান্না থামাতে পারছি না। ইচ্ছে করছে সেজদায় পড়ে কাঁদতে! হায়! আল্লাহ! আমি তোমাকে ভালোবাসার ব্যাপারে কতোই না পিছিয়ে!

বৃষ্টি উঠে দাঁড়ালো। আমার অবস্থা দেখে সে কেমন জানি ধাক্কার মতো খেলো। অনেকক্ষণ চুপ থেকে ধরা গলায় বললো সে- " আল্লাহ পাক তো আমাকেও এসব নিয়ামত দান করেছেন, তাকে তো আমারও ভালোবাসা দরকার! আর আমি এটা কি করছি! যে আমায় কিছুই দেয়নি তার জন্য নিজেকে বিক্রি করে দিতে দ্বিধাবোধ করলাম না আর যে এতকিছু দিলো তাঁর জন্য কিছুই করলাম না! হায়! তাহলে আমাকে কতোক্ষানি কাঁদা উচিত!” 

এই প্রথম মেয়েটাকে ভালো লাগলো আমার। ঘৃণাটা অনেকটাই দূরে সরে গেল। বৃষ্টি আমার হাত ধরে বললো-
“আপনি আমার স্বামী, আপনি যেভাবে চলতে বলবেন আমি সেভাবেই চলবো। বিশ্বাস করেন, ছোটবেলা থেকে আমাকে ইসলামের কোনো কিছুই শেখানো হয়নি। নতুবা আমিও দ্বীনদার হতে পারতাম! আমি আজ পর্যন্ত নামাজও পড়তে পারি না। ওজুও করতে জানি না। আমি নামাজ রোজা পর্দা সবকিছু ঠিকঠাক মেনে চলতে চাই। আপনি আমাকে শেখাবেন প্লিজ?”

আমি চোখ মুছে বললূম-
- কেন নয়? অবশ্যই শেখবো। 
বৃষ্টি আবেগে কাঁদতে লাগলো৷ হঠাৎ অপরিচিত উদ্ভট টাইপের মেয়েটা আমার জীবনের যেন শ্রেষ্ঠ সম্পদ হয়ে উঠলো। 

নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম আমি। পিছনে বৃষ্টিও দাড়িয়ে গেল। কি সুরাকেরাত পাঠ করবো! শুধুই কান্না আসে। নামাজের পর হাত তুলতেই আর যেন চোখ সামলাতে পারলাম না। আজীবন রবকে ভালোবেসে যেতে চাই শুধু এই দোয়াটুকুই মুখ থেকে ফুটলো। বৃষ্টিও কাঁদতে লাগলো। সেই সঙ্গে আকাশে মেঘ গর্জন করে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো! সে কি বৃষ্টি! বৃষ্টির শব্দে আমার বউ কি কি দুয়া করতে লাগলো আর শুনতে পেলাম না। মেয়েটার প্রতি এবার কেমন যেন মায়া লাগলো। সে এখনো জানে যে আমি তাকে ঘৃণা করি! অথচ আল্লাহর জন্য এই একটু আগে ভালোবেসে ফেলেছি তাকে। সে ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে শুভ্রতম ভালোবাসা!

[লেখার হাত অপরিপক্ক, ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

Comments

Popular posts from this blog

একজন পতিতার প্রেমের গল্প

What are the benefits of exercising in the morning?

Know the right time to exercise